ঝোপঝাড় সাফে ফিরছে জননিরাপত্তা সড়কে ছিনতাই-ডাকাতি রোধে পৌর প্রশাসক-ওসির উদ্যোগ
ঝোপঝাড় সাফে ফিরছে জননিরাপত্তা সড়কে ছিনতাই-ডাকাতি রোধে পৌর প্রশাসক-ওসির উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর গাজীপুরের কালীগঞ্জ-টঙ্গী ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে এক ভীতিকর নাম হয়ে উঠেছিল স্থানীয় মানুষ ও পরিবহন চালকদের কাছে। বিশেষ করে রাতের বেলা সড়কের নির্জন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝোপঝাড়ে উৎপেতে থাকত ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের সদস্যরা। চলন্ত গাড়িতে ঢিল ছুঁড়ে কিংবা কৌশলে চাকা পাংচার হয়েছে মনে করিয়ে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে, মুহূর্তেই চালক ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেওয় হতো।
এই চিত্র পাল্টাতে এবার সক্রিয় হয়েছে কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিনের যৌথ নেতৃত্বে শুরু হয়েছে সড়কের পাশে ঝোপঝাড় পরিস্কারের বিশেষ অভিযান।
এই সড়কে যাতায়াতকারী চালকরা জানান, রাতের বেলা অন্ধকারে হঠাৎ ঝোপ থেকে ঢিল পড়ে গাড়ির ছাদে বা জানালায়। তখন মনে হয় চাকা পাংচার হয়েছে। গাড়ি থামাতেই ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসে সশস্ত্র ছিনতাইকারী বা ডাকাত দল। চোখের পলকে চালক ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয়।
মোহাম্মদ হোসেন আলী নামে ভৈরবগামী পাইভেটকারের এক চালক বলেন, "চোখের সামনে ছুরি ঠেকিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, এমনকি গাড়ির যন্ত্রাংশ পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। এমনও হয়েছে যে যাত্রীদের মারধর করা হয়েছে প্রতিরোধ করতে গিয়ে।"
এই সড়কের পাশেই বসবাস করেন অনেক সাধারণ মানুষ তাঁরা জানান, প্রতিনিয় রাতে কেউ না কেউ ডাকাতের কবলে পড়ে তাঁদের বাড়িতে ছুটে আসে।
রাস্তার পাশে বাড়ি নাম প্রকাশে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন বলেন, "আমাদের বাড়ির সামনে বারবার এমন ঘটনা ঘটেছে আমরা নিজেরাও আতঙ্কে থাকি। তবে এই ঝোপঝাড় পরিষ্কারের উদ্যোগ ভালো, এতে অন্তত নিরাপত্তা কিছুটা ফিরবে।"
ঝোপঝাড় পরিষ্কারে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জানান, তারা অভিযানের সময় বেশ কিছু মোটা রড, লোহার লাঠি, টর্চলাইট পেয়েছেন, যা স্পষ্টতই ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জাম। এসব দেখে বোঝা যায় যে এই এলাকাগুলো ছিল পূর্ব পরিকল্পিত অপরাধের ঘাঁটি।
স্থানীয় মানুষ ও চালকদের মতে, প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাঁরা বলছেন, শুধু ঝোপঝাড় পরিষ্কার নয়, নিয়মিত টহল, আলোকসজ্জা ও সিসিটিভি স্থাপন করলে সড়কটি আরও নিরাপদ হবে। এখন দেখা যাক, প্রশাসনের এই অঙ্গীকার কতটা স্থায়ী হয়।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, "এই সড়কে সন্ত্রাসীদের দমন করতে হলে আগে তাদের লুকিয়ে থাকার জায়গা ধ্বংস করতে হবে। ঝোপঝাড় পরিস্কার করে আমরা প্রথম ধাপ নিয়েছি। এছাড়া আমরা রাতে টহলও বাড়াচ্ছি। সড়কজুড়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারেও পরিকল্পনা রয়েছে।"
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ জানান, "এটি শুধুমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান নয়, এটি জননিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষ একসাথে কাজ করে এই সড়ককে নিরাপদ করে তুলতে চায়। আমরা ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযানে ধারাবাহিকতা রাখব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স